দলবদ্ধভাবে প্রতিবাদ করতে হবে - রতন বসাক

 

           

         দলবদ্ধভাবে প্রতিবাদ করতে হবে

                     রতন বসাক


         বিভিন্ন রকম সোশ্যাল মিডিয়া আর নিউজ চ্যানেলের মাধ্যমে আজকাল অনেক রকম ঘটনার কথা দেখছি ও শুনতে পাচ্ছি। তার মধ্যে একটা ঘটনা হলো যে, কিছু মানুষ আজকাল নিজের হাতে আইন তুলে নিচ্ছে। অর্থাৎ সমাজে কোন কিছু ঘটলে সেটা নিজে বিচার করে নিজেই তার শাস্তি প্রদান করছে নির্মমভাবে। সেই ঘটনার জন্য নিজে যেটা ভালো বুঝবে, সেটাই করছে। অন্যায় কাজ করলেও তার জন্য তাঁর নিজের কোন অনুশোচনা হচ্ছে না।

          সোজা কথায় বলা যায় এরা বাহুবলী অর্থাৎ মাতব্বরি মানে দাদাগিরি করছে নির্ভয়ে। সমাজের মানুষ যাতে তাঁকে ভয় পেয়ে তাঁর সব অন্যায় কাজ চুপচাপ মুখ বুঝে সহ্য করে, এটাই এই শ্রেণীর মানুষরা চায়। অল্প কিছু মাতব্বরী শ্রেণীর মানুষ এইসব কাজ করতে পারে। তার কারণ হলো তাঁর পেছনে কোন রাজনৈতিক দলের নেতার অদৃশ্য হাত আছে আর প্রশাসন অর্থাৎ পুলিশ অন্যায় কাজগুলো দেখেও দেখে না। 

           কোন প্রেমিক যুগল কিংবা পরকীয়া কেউ করলে, তাঁদের ধরে সমাজে সবার সামনে অপদস্ত করে নির্মমভাবে অত্যাচার করে। আবার কোন ছেলেধরা সন্দেহের মানুষকে কেউ ধরতে পারলে, তাঁকে এতটাই প্রহার করছে যে, তাঁর মৃত্যু পর্যন্তও হয়ে যাচ্ছে। শুধুমাত্র সন্দেহের বশে কিংবা পুরো ব্যাপারটা না জেনে, তাঁরা নিজেরাই অন্যায় কাজ ভেবেই তার বিচার করে। কোনরকম দেশের আইনের ধার ধারে না এরা। 

           দেশে একটা আইন বলে কিছু আছে। সেটা হলো কেউ যদি অন্যায় কাজ করে। তাঁকে ধরে পুলিশ অর্থাৎ প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া উচিত। আর পুলিশ সেই অন্যায়কারী মানুষকে আদালতে পেশ করবে। তারপর সেই অন্যায়কারীর অন্যায়ের বিচারে যে শাস্তি প্রাপ্য হবে। সেই শাস্তি তাঁকে প্রদান করা হয়। এই বিচার ব্যবস্থায় দেশের প্রত্যেকের বিশ্বাস ও ভরসা রাখা উচিত। আর নিজের হাতে কোন সময়ই আইন তুলে নেওয়া উচিত নয়। 

          ভালো ও মন্দ মানুষ নিয়েই একটা সমাজ গঠিত হয়। সমাজের প্রত্যেকটি মানুষই ভালো হবে কিংবা প্রত্যেকটি মানুষই মন্দ তাও কিন্তু নয়। এটা দেখা যায় যে একটা সমাজে ভালো মানুষের সংখ্যা অনেক অনেক বেশি আর মন্দ মানুষের সংখ্যা খুবই নগণ্য। খুব সামান্য মন্দ মানুষ তাঁরা অন্যায় কাজ সহজে করতে পারে। কেননা ভালো মানুষ সংখ্যায় বেশি থাকলেও, প্রত্যেকে তাঁর নিজের ব্যক্তি স্বার্থের কথা ভেবেই কোন প্রতিবাদ করে না। মন্দ মানুষরা ভালো মানুষদের ভয় দেখিয়ে তাদের চুপ থাকতে বাধ্য করে। 

         তবে ভালো মানুষেরা যদি নিজেদের সহমত পোষণ করে, দলবদ্ধভাবে একসাথে মন্দ মানুষের অন্যায়ের প্রতিবাদ করে। তাহলে সমাজে কোন রকম অন্যায় কিংবা বেআইনি কাজ কেউ করতে পারে না। এভাবে কিছু মাতব্বরি শ্রেণীর মানুষ যদি নিজের হাতে আইন তুলে নেয়। তাহলে আগামীতে আমাদের সবার তার জন্য মাশুল গুনতে হবে। সমাজে সুষ্ঠভাবে বেঁচে থাকা সম্ভব হবে না। তাই ভালো মানুষদের, যাঁরা নিজের হাতে আইন তুলে নেয়, তাঁদের বিরুদ্ধে একমত হয়ে প্রতিবাদ করতে হবে এখন থেকেই।

---সমাপ্ত---

                     লেখক পরিচিতি

আমি একজন প্রাক্তন ভারতীয় বিমান বাহিনীর সৈনিক। জন্ম ফেব্রুয়ারি ২৬, ১৯৬৭ ভারতবর্ষ, পশ্চিমবঙ্গ, কলকাতা। জুন - ২০১৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে ফেসবুকে কবিতা, ছড়া ও প্রবন্ধ লেখালেখি করি। আমার লেখা যৌথ কাব্য সংকলন ২৫ ও ১টি একক পারমাণু কাব্য সংকলন বের হয়েছে। এ পর্যন্ত ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ থেকে সম্মাননা প্রাপ্ত ছড়া/কবিতা ৬৯০০ ও প্রবন্ধ ১৫০ এর বেশি লিখেছি।